মডেলকাণ্ডে নজরদারিতে ২১ সুগারড্যাডি
রাকিব হাসান:
একে একে ধরা পড়ছেন আলোচিত সব মডেল অভিনেত্রীরা। নজরদারিতে আছেন আরও ডজন খানেক। বেরিয়ে আসছে, থলের বিড়াল।
নজরদারিতে থাকা মডেলদের পাশাপাশি ঘুম হারাম অন্তত ২১ প্রভাবশালী ব্যক্তির। এদেরকে বলা হচ্ছে সুগার ড্যাডি। এক সময় এসব ব্যক্তি ওই মডেল-অভিনেত্রীদের ঘনিষ্ঠ ছিলেন। তাদের সঙ্গ পেতে নিয়ে গেছেন দেশের বাইরেও। সেই প্লেজার ট্রিপগুলোই এখন তাদের ঘুম কেড়ে নিয়েছে।
পুলিশ, র্যাব ও একাধিক গোয়েন্দা সূত্রে জানা যায়, ২১ প্রভাবশালী ব্যক্তির নাম পাওয়া গেছে। তাদের মধ্যে স্বর্ণ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত তিনজন, পোশাক শিল্প ব্যবসায় দুই, রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ ছয়, অন্য সব ব্যবসায় জড়িত ছয়, বিশেষ দুই ব্যক্তি ও একটি বিশেষ পেশায় থাকা একজন এবং ফার্নিচার-প্লাস্টিকসহ কয়েকটি ব্যবসায় জড়িত একজন রয়েছেন।
রাজধানীর তারকা হোটেল ও পার্টি হাউজে তাদের নিয়মিত যাতায়াত ছিল। নামে বেনামে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের আড়ালে গুলশান-বনানীর ২৭টি স্থানে চলতো অনৈতিক কার্যক্রম। সেখানেও ছিল এই প্রভাবশালীদের নিয়মিত যাতায়াত। এছাড়া বনানীর অন্তত ১৩টি না সেবন লাউঞ্জেও ছিল তাদের অন্যতম আখড়া।
সূত্র জানায়, সুন্দরী রমণীদের নিয়ে দুবাই, ইউরোপ, আমেরিকা, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিায়সহ বিভিন্ন দেশে একাধিক ‘প্লেজার ট্রিপ’ দিয়েছেন অনেকে। ঘন ঘন তাদের বিদেশ যাত্রার তথ্য পুলিশের ইমিগ্রেশন শাখা থেকে সংগ্রহ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে পিয়াসা, মিশু, জিসান ও একটি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের কর্ণধার ব্যক্তির দুই ছেলের একসঙ্গে সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়া ভ্রমণের তথ্য বের হয়েছে। দেশের বাইরে অবস্থানকালে তাদের অনেকের ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ভিডিও ও স্থিরচিত্র এখন গোয়েন্দাদের হাতে। এগুলো বিশ্লেষণ করে আরও একাধিক মামলা হতে পারে।
পরিস্থিতি বুঝতে পেরে, প্রশাসনের উচ্চ পর্যায়ে যোগাযোগ করছেন কেউ কেউ। মোবাইল ফোন বন্ধ করে এবং ফেসবুক আইডি নিষ্ক্রিয় করে তাদের অন্তত চারজন গা-ঢাকা দিয়েছেন। এদের গতিবিধি নজরদারিতে রেখেছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
‘সুগার ড্যাডি’দের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা টাকার বিনিময়ে অথবা চাপ দিয়ে অনেক মডেলের ঘনিষ্ঠ হয়েছেন। নানা অপরাধমূলক কাজে ব্যবহার করেছেন। সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক কিংবা প্রশাসনিকভাবে এসব প্রভাবশালী ব্যক্তিকে খুঁজছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।