পাইলটের অবহেলায় ক্ষতির মুখে বাংলাদেশ বিমান!
উড়োজাহাজের এক পাইলটের মাত্র ১৩ সেকেন্ডের অবহেলায় প্রায় ৬০ কোটি টাকা ক্ষতির মুখে পড়েছে সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ বিমান। এই অবহেলা আরও দীর্ঘায়িত হলে মাঝ আকাশেই শেষ হয়ে যেত বিমানটি বলছেন বিশেষজ্ঞরা।
এদিকে নিজের অবহেলার তথ্য গোপন করেছিলেন পাইলট। ফলে আবার উড়ালে নিশ্চিত বড় ধরণের দুর্ঘটনায় পড়তে হতো বিমানটিকে। যদিও নিয়মিত পরীক্ষা-নীরিক্ষায় উড্ডয়নের আগেই ধরা পড়ে ত্রুটি। তবুও মেরামতের সময় আরও দুই থেকে তিন মাস বসিয়ে রাখতে হবে বিমানটিকে। ফলে এ ঘটনায় ক্ষতি দাঁড়াবে অন্তত ১০০ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ বিমানের সূত্র জানান, আলোচিত ঘটনাটি পয়লা ফেব্রুয়ারির। সিলেট থেকে ঢাকা আসার পথে কোন কারণ ছাড়াই উড়োজাহাজের পাইলট পাওয়ার লিভারটি ১০০ ভাগের বেশি ইমার্জেন্সি পাওয়ার হিসেবে অর্থাৎ ওয়াল টু ওয়াল ব্যবহার করেন।
যদিও সামনের মনিটরে বিপদ সংকেত জ্বলে ওঠার পর তড়িঘড়ি করে স্বাভাবিক পজিশনে নিয়ে আসা হয় লিভারটি। ততক্ষণে পেরিয়ে যায় ১৩ সেকেন্ড। এভাবে আরও কয়েক সেকেন্ড চললে মাঝ আকাশেই ঝলসে যেত বিমানটি। কেননা মাত্র ১৩ সেকেন্ডেই জ্বলে গেছে উড়োজাহাজের দুটি ইঞ্জিনের বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাধারণত বিশেষ প্রয়োজনে বা উড্ডয়নের পর বড় ধরণের বিপদ এড়াতে বিমানের পাওয়ার লিভারের সর্বোচ্চ ব্যবহার করেন পাইলট। অথচ, ‘আকাশতরী’ নামের ড্যাশ-এইট মডেলের বিমানটির পাইলট তা করেন কোনো কোনো কারণ ছাড়াই।
এদিকে নিয়ম অনুযায়ী, এ ধরণের ঘটনা যদি কোনো কারণে ঘটে যায়, তাহলে ল্যান্ডিং-এর পরপরই দ্রুত লগবইতে লিখিতভাবে জানানোর কথা থাকলেও পাইলট সেটি করেননি। এ বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। বিমান দুর্ঘটনা বিষয়ক বিশেষজ্ঞ ক্যাপ্টেন (অব.) সালাহ উদ্দিন এম রহমতুল্লাহ বলেন, পাইলটকে অবশ্যই বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানো উচিত ছিল। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, বেশির ভাগ পাইলটদের অভ্যাস, তারা লগবুকে তথ্য রেজিস্টার করেন না। অথচ লগবুকে এসব তথ্য লিখে রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং এটি নিয়ে রেগ্যুলেশনও আছে।
জানা যায়, ওই ফ্লাইটের পাইলট ছিলেন ক্যাপ্টেন রুবাইয়েত। তিনি বিমানের পাইলটদের ট্রেনিং বিভাগের ডেপুটি প্রধান। ঘটনার পর থেকে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে এ পর্যন্ত আকাশতরী গ্রাউন্ডেড হয়ে বিমানের হ্যাঙ্গারে পড়ে আছে।