দেশ ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন মুরাদ; আজ রাতেই যাবেন কানাডা
রাকিবুল ইসলাম
তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রীর পদ হারানো মুরাদ হাসান বিদেশে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তিনি আজ বৃহস্পতিবার রাতে কানাডায় যাওয়ার জন্য টিকিট কেটেছেন। গতকাল বুধবার তিনি একটি টিকিট কাটেন বলে সংশ্লিষ্ট এয়ারলাইনস সূত্রে জানা গেছে। এমন খবরই দিয়েছে প্রথম আলো।
সংবাদপত্রটি বলছে, সদ্য সাবেক এই প্রতিমন্ত্রীর দপ্তরের একটি সূত্র জানিয়েছে, প্রতিমন্ত্রী থাকা অবস্থায় মুরাদ হাসানের যে বিশেষ লাল পাসপোর্ট পাসপোর্ট ছিল, সেটি পদত্যাগের দিন, গত মঙ্গলবার তাঁর কাছে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে মুরাদ হাসানের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। এদিকে মুরাদ হাসানের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এ ছাড়া অনলাইন প্ল্যাটফর্মসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মুরাদ হাসানের বক্তব্যের ৩৮৭টি লিংক চিহ্নিত করেছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন।
সম্প্রতি কিছু বিতর্কিত বক্তব্য দিয়ে মন্ত্রিত্ব হারান মুরাদ হাসান। এরই মধ্যে তাঁর নাম তথ্য মন্ত্রণালয়ের নামফলক থেকেও মুছে ফেলা হয়েছে। এ ছাড়া মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ওয়েবসাইটে থাকা প্রতিমন্ত্রীর তালিকাতেও তাঁর নাম আর নেই। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটেও নেই তাঁর নাম।
মুরাদ হাসান পেশায় চিকিৎসক। আওয়ামী লীগপন্থী চিকিৎসকদের সংগঠন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ ও একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য তিনি। জামালপুর-৪ আসনের সংসদ সদস্য ডা. মুরাদ হাসান। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর গঠিত সরকারে প্রথমে মুরাদ হাসানকে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেয়া হয়। পরে, ২০১৯ সালের মে মাসে স্বাস্থ্য থেকে তাকে দেয়া হয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব।
মুরাদ হাসানের জন্ম ১৯৭৪ সালের ১০ অক্টোবর। জামালপুর জেলার সরিষাবাড়ী উপজেলার দৌলতপুর গ্রামের ঐতিহ্যবাহী সম্ভ্রান্ত এক মুসলিম পরিবারে তাঁর জন্ম। পিতা মতিয়র রহমান তালুকদার, একজন রাজনীতিবিদ ও আইনজীবী। মাতা মনোয়ারা বেগম ছিলেন স্বামীর রাজনৈতিক কার্যক্রমের একনিষ্ঠ সহচর।
জামালপুর শহরের কিশলয় আদর্শ বিদ্যা নিকেতনে প্রাথমিক শিক্ষা জীবন শুরু করেন মুরাদ হাসান। প্রাথমিক শিক্ষা শেষে তিনি জামালপুর জেলা স্কুলে ভর্তি হন। ১৯৯০ সালে জামালপুর জেলা স্কুল থেকে বিজ্ঞান বিভাগে স্টার মার্ক সহ প্রথম বিভাগ পেয়ে এস.এস.সি পাস করেন। পরবর্তীতে ঢাকার নটরডেম কলেজে থেকে ১৯৯২ সালে স্টার মার্ক সহ প্রথম বিভাগ পেয়ে পাস করেন এইচ.এস.সি।
ডা. মো. মুরাদ হাসান ২০০১ সালে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করেন। ২০০৪-২০০৫ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে প্লাস্টিক এবং প্রসাধনী অস্ত্রোপচার এর উপর পোস্ট গ্রাজুয়েশন ট্রেইনিং করেন মুরাদ। ২০১১ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রেডিয়েশন অনকোলজি’র বিষয়ে অর্জন করেন এম. ফিল ডিগ্রী ।
ব্যক্তিগত জীবনে ডা: মো: মুরাদ হাসান, এক কন্যা ও এক পুত্র সন্তানের জনক। তাঁর সহধর্মীনি জাহানারা এহসানও পেশায় একজন চিকিৎসক।