কে এই অপু বাঁশফোর ? কেন হেলিকপ্টারে বউ নিয়ে গেলেন পরিচ্ছন্নতাকর্মী ?
সাদাকালো নিউজ
বর অপু বাঁশফোর। নেত্রকোণার হরিজন সম্প্রদায়ের ছেলে। অপু পেশায় একজন চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী। তার বাবা প্রয়াত দিলিপ বাঁশফোর। তিনি ডোমের কাজ করতেন। বাবার শেষ স্বপ্ন পূরণ করতে হেলিকপ্টারে চড়ে নববধূকে নিজ বাড়িতে নিয়ে গেছেন অপু।
কনের নাম সানিতা রানি। তার বাড়ি কুড়িগ্রাম পৌর শহরের বস্তিপাড়া গ্রামে। তার বাবার নাম ভুট্টলাল রবিদাস। তিনি হরিজন যুব সম্প্রদায় কমিটির সাধারণ সম্পাদক।
১৭ই জানুয়ারি রাত দুইটায় অপুর সঙ্গে রানির বিয়ে সম্পন্ন হয়। এরপর ১৮ই জানুয়ারি বিয়ের সব কার্যক্রম শেষে দুপুর দেড়টায় কুড়িগ্রাম জেলা স্টেডিয়াম মাঠ থেকে নববধূকে হেলিকপ্টারে উড়িয়ে নিয়ে যান বর অপু বাঁশফোর।
এ ঘটনায় জেলাজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। শুধু তাই নয়, পুরো বিয়ে ভিডিও করা হয় ড্রোন দিয়ে। এ ঘটনায় আনন্দ উল্লাস প্রকাশ করে এলাকার পুরো হরিজন পল্লী। নেচে-গেয়ে মুখর হয়ে উঠে গোটা এলাকা।
বৃহত্তর রংপুর বিভাগে এ ধরণের ঘটনা আগে কখনও ঘটেনি। এ কারণে নানা আলোচনা-সমালোচনা ছিল পুরো এলাকায়। কুড়িগ্রাম জেলা স্টেডিয়াম মাঠ থেকে নববধূকে নিয়ে যাওয়ার সময় স্টেডিয়ামে ছিলো উপচেপরা মানুষের ভিড়। পুরো ঘটনা একনজর দেখতে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের লোকজন ভিড় জমায় সেখানে।
নববধূর পরিবার সূত্রে জানা যায়, নেত্রকোণায় পাঠশালা ব্যান্ডে কাজ করে অপু। এছাড়া একজন পরিচ্ছন্নকর্মী হিসেবে সরকারি চাকরি করে। অপুর কাছের একজন আত্মীয় কুড়িগ্রামে থাকেন। তার সুবাদেই পারিবারিকভাবে অপু-রানির বিয়ে ঠিক হয়।
বর অপু বাঁশফোড় জানান, গত দুইবছর আগে আমার বাবা পরপারে পাড়ি দেন। বাবার শেষ স্বপ্ন ছিল আমার বউকে যেন হেলিকপ্টারে করে বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। এজন্য অনেক দিন থেকে অর্থ সংগ্রহ করে আসছি। আমার পরিবারও সহযোগিতা করেছে। ঘণ্টায় ৮০ হাজার টাকা করে তিন ঘণ্টার জন্য হেলিকপ্টারটি ভাড়া করা হয়।
কনের বাবা ভুট্ট বাসফোর বলেন, আমরা গরিব মানুষ। বর পক্ষ আমাদের মেয়েকে পছন্দ করেছে। দুই পরিবারের সম্মতিতে বিয়ে দেয়া হয়েছে। মেয়েকে হেলিকপ্টারে করে বউ বানিয়ে নিয়ে যাবে এ কথা কখনোই বিশ্বাস করতাম না। বুধবার হেলিকপ্টার এসে মেয়েকে যখন নিয়ে গেল, বুকটা শান্তিতে ভরে গেল।
নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সদর থানার পুলিশের এসআই মাজেদ আলী বলেন, আমরা শৃঙ্খলা রক্ষা নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলাম। খুব সুন্দরভাবে হেলিকপ্টার অবতরণ করে কনেকে নিয়ে বরযাত্রীরা আবার চলে গেছে।
