কে এই শহিদুল ইসলাম? পুরষ্কারের দেড় লাখ টাকা মসজিদে দান
জহুরা প্রিতু
কেউ বয়সে বুড়ো, কেউবা মনে। অনেকে বয়সে বুড়ো হয়ে গেলেও মনের দিক দিয়ে থাকেন চির তরুণ। ইংরেজিতে যাকে বলে এভারগ্রিন। আর চির তরুণ এসব মানুষ অসম্ভবকে জয় করতে পারেন সহজেই। তেমনই এক চির তরুণ নরসিংদী জেলার ৬৩ বছরের শহিদুল ইসলাম।
বয়স বেড়েছে, তবে মনের জোরে নেই কমতি। মেঘনা নদীতে ১৫ কিলোমিটার সাঁতরে চমক সৃষ্টি করেছেন তিনি। সেইসাথে পুরষ্কার হিসেবে পেয়েছেন দেড় লাখ টাকা।
পুরষ্কারের এই টাকা নেননি তিনি। স্থানীয় একটি মসজিদ নির্মাণে দান করার ঘোষণাও দেন শহিদুল।
শহিদুল ইসলাম বাড়ি নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার আমিরগঞ্জ ইউনিয়নের দঁড়িবালুয়াকান্দি গ্রামে। পেশায় কৃষক।
১৩ই সেপ্টেম্বর উত্তাল মেঘনায় ১৫ কিলোমিটার সাঁতরে সাবইকে চমকে দেন তিনি। সকাল ৮টায় নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার হাইরমারা ইউনিয়নের মনিপুরাঘাট থেকে শুরু সাঁতার। শেষ হয় দুপুর ১২টায় নরসিংদীর সদর উপজেলা ঘাটে। সাঁতার শেষ করতে পারলে দেড় লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা দেয় গ্রামবাসী।
এতে রাজি হন কৃষক শহিদুল। ঘাটে ও নদীতে নৌকা নিয়ে হাজার হাজার মানুষ শহিদুলের সাঁতার দেখতে ভীড় জমান। উত্তাল মেঘনায় টানা চারঘন্টা সাঁতার কাটেন তিনি। সবার ধারণা ছিল পারবেন না শহিদুল। কিন্তু সবাইকে অবাক করে দিয়ে ৪ ঘন্টায় দুর্গ জয় করেন চির তরুণ এ শহিদুল।
এমন জয়ে ফুল দিয়ে শহিদুলকে বরণ করে নেয় গ্রামবাসী। পুরস্কারে পুরো দেড় লাখ টাকাই মসজিদ নির্মাণে ব্যয় করবেন বলে জানান তিনি। সাঁতারু শহিদুল ইসলাম বলেন, আগে থেকেই ইচ্ছে ছিল মেঘনা পাড়ি দিবেন। অবশেষে স্বপ্ন পূরণ হওয়ায় ভালো লাগছে। সামনে আরো বহুপথ পাড়ি দিতে চান তিনি।
এলাকাবাসী জানান, সাঁতারের সময় বৃদ্ধ শহিদুলের শরীরের কোন ক্লান্তির ছাপ ছিল না। যদিও প্রথমে মনে হচ্ছিল পারবেন না শহিদুল। পরে ঠিকই পাড়ি দিয়েছেন ১৫ কিলোমিটার। ইচ্ছে থাকলে বয়স কখনো বাঁধা হতে পারেনা। এটাই প্রমাণ দিলেন ৬৩ বছরের শহিদুল।
জানা গেছে, এর আগে পল্লীচিকিৎসক বকুল মিয়া ৩৫ কিলোমিটার সাঁতরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর থেকে উপজেলার মনিপুরা ঘাটে পৌঁছান। এতে তিনি সাড়ে ছয় ঘন্টা সময় নেন। পরে ওই ঘটনায় অনুপ্রাণিত হয়েই এই সাঁতারে অংশ নেন শহিদুল।