কেনো দেশে ফিরেই ডিএ তায়েবের নামে মামলা করবেন নিপুণ!
রেজাউল করিম
একের পর এক কান্ড ঘটিয়ে আলোচনার শীর্ষে রয়েছেন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাবেক সাধারন সম্পাদক ও অভিনেত্রী নিপুন আক্তার। আদালতে রিট কান্ডের পর এবার খোদ পুলিশ কর্মকর্তা ও অভিনেতা ডি.এ তায়েবের বিরুদ্ধে মামলার ঘোষণা দিয়েছেন এই অভিনেত্রী। কিন্তু ঠান্ডা মেজাজের অভিনেতা ডি.এ তায়েবের উপর হঠাত কেনো ক্ষেপলেন এই শিল্পী নেত্রী?
সম্প্রতি চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে মিশা সওদাগর সভাপতি ও মনোয়ার হোসেন ডিপজল সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। এ ফল স্থগিত চেয়ে আদালতে রিট করেছেন পরাজিত সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী চিত্রনায়িকা নিপুণ আক্তার। বুধবার বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের হাইকোর্ট বেঞ্চে আইনজীবী অ্যাডভোকেট পলাশ চন্দ্র রায়ের মাধ্যমে রিট করেন এই নায়িকা।
নির্বাচনে অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ এনে এই ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠনের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে রিটে। পাশাপাশি নতুন করে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। মুলত এরপরই বিষয়টি নিয়ে শুরু হয় তর্কবিতর্ক। বৃহস্পতিবার ১৬ মে সমিতির কার্যকরী সভা শেষে সংগঠনের সহ-সভাপতি চিত্রনায়ক ডিএ তায়েব জানান, নিপুণের সদস্য পদ বাতিল হতে পারে। গণমাধ্যমে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদককে নিয়ে বাজে মন্তব্য করেছেন তিনি। তার সদস্যপদ কেন বাতিল করা হবে না, সেটি জানতে চেয়ে চিঠি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বর্তমান কমিটি।
নিপুণ মানসিক ভারসাম্য হারিয়েছেন উল্লেখ করে ডি এ তায়েব বলেন, মনোয়ার হোসেন ডিপজল যাকে চলচ্চিত্রে নিয়ে এসেছেন, চলচ্চিত্রে জন্ম দিয়েছেন এবং যিনি তাকে ‘বাবা’ বলে ডেকেছেন, সেই তাকে বাজে ভাষায় ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করার অর্থ হচ্ছে, তিনি মানসিক ভারসাম্য হারিয়েছেন। তা নাহলে, এমন মন্তব্য করতে পারেন না। তিনি নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে আইনের আশ্রয় নিতেই পারেন, যে কেউ পারেন। তার অর্থ এই নয়, সমিতির সাধারণ সম্পাদককে ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করবেন। এটা মানসিক বিকারগ্রস্ততা ছাড়া কিছু নয়।
এদিকে ডিএ তায়েবের উদ্দেশে চিত্রনায়িকা বলেন, ডিএ তায়েবের মতো একদমই ফ্রি লোক না আমি। তিনি কি অভিনেতা, একজন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেতা, তার কোনো সিনেমা ব্লকবাস্টার? তিনি কি বাংলাদেশি চলচ্চিত্র অঙ্গনে নিজের নাম নক্ষত্রের সঙ্গে লিখেছেন- তার কাছে আমার প্রশ্ন রইল। আর তিনি আমাকে নিয়ে যেটি বলেছেন, আমার মানসিক সমস্যা রয়েছে। সেটার জন্য আমি দেশে আসার পর তার নামে সাইবার ক্রাইমে মামলা করব।
এদিকে সদস্য পদ বাতিল প্রসঙ্গে নিপুণ বলেছেন আমার সদস্যপদের সঙ্গে কোর্টের কোনো সম্পর্ক নেই। রিট যেহেতু করেছি, ওনাদের কোর্টে আসতেই হবে। আর তিনি যদি সদস্যপদ খারিজ করতেই চায়, তাহলে সেটার জন্যও কোর্ট রয়েছে। দেশে তো আইন রয়েছে।
রিটের বিষয়টি নিয়ে বর্তমান কমিটির সাধারণ সম্পাদক ডিপজল বলেন, ‘কেস খেলবা, আসো। যেটা খেলার মন চায় সেটাই খেলো। আমরা ভদ্রতা ও নম্রতা চাই। আমরা চাই কীভাবে চলচ্চিত্র এগিয়ে নেওয়া যায়, সেদিকে কাজ করার। আমরা কোনো ঝামেলা চাই না।’
অন্যদিকে হুংকার দিয়ে নতুন কমিটির সভাপতি মিশা সওদাগর বলেন, ‘সংবিধানকে যিনি ক্ষতবিক্ষত করেছেন, তাকে পুরোপুরি বুঝিয়ে দেব শিল্পী সমিতির সংগঠন কী? এবার শিল্পী সমিতির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক কে? এবার এই সংগঠনের ক্যাবিনেটটা কী?
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির ২০২২-২৪ মেয়াদের সাধারণ সম্পাদকের চেয়ারে বসা নিয়েও দ্বন্দ্বে জড়ান নিপুণ এবং চিত্রনায়ক জায়েদ খান। একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগের পর মামলা গড়ায় আদালত পর্যন্ত। এবারের নির্বাচনেও সেই আশংকা ছিলো, তবে সেটি উড়িয়েছিলেন সবাই। অতঃপর শংকাই সত্যি হলো, আর নির্বাচনের ফলাফল নিয়েও নতুন কমিটির সঙ্গে দ্বন্দ্বে নিপুণ। এবার কে জিতবে সেটিই এখন দেখার পালা!