কক্সবাজার সৈকতে এক মাসে এতো মৃত্যু কেন?
জহুরা প্রিতু
কক্সবাজার সৈকতে গত এক মাসে ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। পানিতে ভেসে যাওয়ার সময় উদ্ধার করা হয়েছে ৩১৫ জনকে।
হঠাৎ করেই কক্সবাজার সমুদ্র এলাকায় কেন বাড়ছে মৃত্যুর মিছিল? প্রশ্ন উঠেছে জনমনে। স্থানীয়রা বলছেন, করোনার কারণে ৪ মাস ১৯ দিন বন্ধ ছিল সব ধরণের পর্যটন স্পট। গত ১৯শে আগস্ট খুলে দেয়া হয় কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত।
তবে, এরপর থেকেই সেখানে ঘটছে একের পর এক দুর্ঘটনা। গত একমাসে সমুদ্রে গোসল করতে নেমে ডুবে এবং ভেসে গিয়ে শিক্ষার্থীসহ ৫ জন মারা গেছেন। পাশাপাশি লাইফগার্ড কর্মীরা পানিতে ভেসে যাওয়ার সময় জীবিত উদ্ধার করেছে ৩১৫ জনকে।
দুর্ঘটনা ঠেকাতে সাগরে গোসলে নামার ক্ষেত্রে ইতোমধ্যে ১০ ধরণের নির্দেশনা জারি করেছে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন। প্রশাসন বলছে, অনেকদিন সমুদ্রস্নান ও বালিয়াড়িতে খেলার আনন্দ থেকে বিরত ছিলেন পর্যটকরা। কক্সবাজারে পর্যটন স্পট খোলার পর এবার অতিরিক্ত আনন্দ, হৈ-হুল্লোড়ে মেতেছেন পর্যটকরা। মনের আনন্দে ঘুরে বেড়াচ্ছেন এদিক-ওদিক। বেশি আনন্দ উপভোগ করতে গিয়ে মৃত্যুর মিছিল ক্রমেই বড় হচ্ছে।
গণমাধ্যমের খবর বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে, গত এক সপ্তাহে সৈকতে নেমে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রসহ চারজন মারা গেছেন। হোটেলের রুমে অতিরিক্ত মদ্যপানে মারা গেছেন দুই পর্যটক।
সৈকতের লাইফগার্ডরা বলছেন, পর্যটকদের অসাবধনতা ও লাইফগাডের্র দেয়া নির্দেশনা না মানার কারণেই দুর্ঘটনা বাড়ছে। বিশেষ করে, জোয়ার-ভাটার সময়সূচি, হুশিয়ারি বাঁশি, বিভিন্ন সংকেত ও লাল পতাকার সংকেত অমান্য করার কারণে দুর্ঘটনায় পড়ছেন পর্যটকরা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সমুদ্র সৈকতের পরিবেশ পরিবর্তন হয়েছে। প্রাকৃতিক নিয়মে সাগরের তলদেশ দিন দিন পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে। বালু সরে গিয়ে সাগরে এখন সৃষ্টি হচ্ছে বড় বড় গুপ্তখাল। যে কারণে দুর্ঘটনা বাড়ছে।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ জানান, সমুদ্রের পানিতে নামার আগে ১০টি নির্দেশনা মানতে হবে পর্যটকসহ সবাইকে। এগুলো সতর্ক বার্তা হিসেবে দেয়া হয়েছে। এ নির্দেশনা সৈকতের উল্লেখযোগ্য পয়েন্টে লাগানো হয়েছে। পর্যটকদের জানা উচিত কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে লাইফগার্ড আছে।
মামুনুর রশীদ বলেন, আত্মীয়স্বজন, পরিবার-পরিজন নিয়ে যারা কক্সবাজার সৈকতে বেড়াতে আসেন তারা অনেক সময় সংকেতগুলো খেয়াল করেন না। তাদের সতর্ক করার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।