এসির জায়গা দখল করবে সবচেয়ে বেশি সাদা রং
রাকিব হাসান
এ যেন সাদার চেয়েও বেশি সাদা। বিশ্বের সবচেয়ে সাদা রং। এই রংটি আবিষ্কার করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের একদল গবেষক। পারডু বিশ্ববিদ্যালয়ের এই গবেষকদের দাবি, রংটি দেয়ালে ব্যবহার করলে এমনিতেই ঠাণ্ডা থাকবে ঘর। সাদা রংয়ের কারণে যে কোনো ভবনের তাপমাত্রা থাকবে নিয়ন্ত্রণে। ব্যবহার করা লাগবে না শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র।
গবেষক দলটির নেতৃত্বে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক জিউলিয়ান রুয়ান। দলের অন্য সদস্যরা তার ছাত্র।
অধ্যাপক রুয়ান জানান, সাত বছর ধরে চলেছে এই গবেষণা। শুরু থেকেই রং ব্যবহার করে কীভাবে বিদ্যুৎ সাশ্রয় করা যায়– তা আবিষ্কারের চেষ্টা করেন তাঁরা। তাদের লক্ষ্য ছিল– এমন একটি রং আবিষ্কার করা, যা একই সঙ্গে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী এবং জলবায়ু পরিবর্তন রোধে কার্যকর ভূমিকার রাখবে।
সাদা রং সূর্যের বিকিরণ প্রতিফলিত করে। ফলে, কোনো ভবনের বাইরের দেয়ালে এই রং ব্যবহার করলে, সূর্যের বিকিরণ প্রতিফলিত করবে। এতে ভেতরের পরিবেশ থাকবে ঠাণ্ডা। এ কারণে বিশ্বের গ্রীষ্মপ্রধান অঞ্চলগুলোতে ভবনের বাইরের দেয়ালে সাদা রং ব্যবহার হয়।
বর্তমানে বাজারে যেসব সাদা রং বা পেইন্ট পাওয়া যায়, সেগুলো সর্বোচ্চ ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ পর্যন্ত সূর্যকিরণ ফেরাতে সক্ষম। তবে অধ্যাপক রুয়ানের দাবি, তাদের আবিষ্কৃত সাদা রংয়ের প্রতিফলন ক্ষমতা ৯৮ দশমিক ১ শতাংশ।
এই অধ্যাপক জানান, এরই মধ্যে ৪৩ ডিগ্রি ফারেনহাইট তাপমাত্রার একটি এলাকাতে এই রংয়ের পরীক্ষা চালানো হয়েছে। সেখানকার একটি ভবনের বাইরের দেয়ালে এই রং লাগানো হয়। পরীক্ষায় দেখা গেছে, রং ব্যবহারের পর সেই ভবনের ভেতরের তাপমাত্রা কমেছে ১৮ ডিগ্রি পর্যন্ত।
রুয়ানের দাবি, ‘কক্ষ শীতল রাখার ক্ষেত্রে এই রং শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের চেয়ে বেশি কার্যকর। এই দাবির সত্যতাও মিলেছে। পৃথিবীর সবচেয়ে সাদা রং হিসেবে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে জায়গাও করে নিয়েছে এটি। রংটির পেটেন্ট পেতে আবেদন পত্র জমা দিয়েছেন গবেষকরা।
এখন গবেষকরা একটি কোম্পানির সঙ্গে কাজ করতে চাইছেন। বড় পরিসরে রংটি বাজারে আনতে পারলে, এর বাণিজ্যিক ব্যবহার বাড়বে বলে মনে করছেন তাঁরা।
মন্তব্য করুন :
