ইভ্যালির মো. রাসেল এবং তার স্ত্রী শামীমা নাসরিন গ্রেপ্তার
রাকিব হাসান
ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির প্রধান নির্বাহী মো. রাসেল এবং তার স্ত্রী ও প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিনের বিরুদ্ধে গুলশান থানায় মামলা করেছেন একজন ভুক্তভোগী। অভিযোগ, অর্থ আত্মসাৎ ও প্রাণনাশের হুমকির।
১৬ই সেপ্টেম্বর সকালে গুলশান থানার ডিউটি অফিসার উপ-পরিদর্শক অনিন্দ্য মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, গতকাল রাতে আরিফ বাকের নামে একজন ভুক্তভোগী মামলাটি করেছেন। মামলা নম্বর ১৯। মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে অর্থ আত্মসাৎ ও ভয়ভীতি দেখানোর।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, গত মে মাসে ইভ্যালির চমকপ্রদ বিজ্ঞাপনে আকৃষ্ট হয়ে আরিফ বাকের তার বন্ধুদের নিয়ে কিছু পণ্য অর্ডার করেন। যার ইনভয়েস নম্বর ১। এ ছাড়া পণ্যের অর্ডার বাবদ সকল মূল্য বিকাশ, নগদ ও সিটি ব্যাংকের কার্ড‘র মাধ্যমে সম্পূর্ণ পরিশোধ করেন।
আরিফ অভিযোগ করেন, পণ্যগুলো ৭-৪৫ কার্যদিবসের মধ্যে সরবরাহে ব্যর্থ হলে উক্ত প্রতিষ্ঠান সমুদয় টাকা ফেরত দিতে অঙ্গীকারবদ্ধ ছিল। কিন্তু ওই সময়ের মধ্যে তারা পণ্য সরবরাহ করেনি। তিনি বহুবার ইভ্যালির কাস্টমার কেয়ার‘র প্রতিনিধির নম্বরে ফোন করেন। প্রতিবার তারা পণ্যগুলো শিগগিরই দিচ্ছে বলে আশ্বস্ত করে যাচ্ছিল। এক পর্যায়ে ইভ্যালি পণ্য অথবা টাকা প্রদানে ব্যর্থ হওয়ার পর তিনি তাদের অফিসে যান। তখন প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী কর্মকর্তা (সিও) মো. রাসেলের সঙ্গে দেখা করতে চাইলে বাধাপ্রাপ্ত হন।
এজাহারে আরিফ জানান, গত ১০ সেপ্টেম্বর তিনিসহ তার বন্ধুরা ইভ্যালি অফিসে গিয়ে পণ্যের অর্ডার সম্পর্কে কথা বলতে চাইলে তারা উত্তেজিত হয়ে চিৎকার-চেঁচামেচি করে। এক পর্যায়ে অফিসের অভ্যন্তরে থাকা ইভ্যালির সিইও রাসেল উত্তেজিত হয়ে তার রুম থেকে বেরিয়ে আরিফকে ভয়-ভীতি প্রদর্শন করেন। পণ্য অথবা টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানান। এক পর্যায়ে প্রাণনাশের হুমকিও দেন বলেও অভিযোগ করেছেন আরিফ।
পণ্য না পাওয়ায় আর্থিক ও মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন জানিয়ে আরিফ বলেন, ইভ্যালি পণ্য বিক্রয়ের নামে নানা প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে তার মত বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তের অসংখ্য গ্রাহকের নিকট থেকে আনুমানিক ৭০০ থেকে ৮০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে।
ভুক্তভোগীর প্রতারণার মামলায় যেকোনো সময় গ্রেপ্তার হতে পারেন আলোচিত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রাসেল এবং তার স্ত্রী ও প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিন। সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটির আরও কয়েকজন কর্মকর্তাও গ্রেপ্তার হতে পারেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক সূত্র এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সূত্রটি বলছে, গতরাতে ভুক্তভোগী যখন থানায় মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তখনই ইভ্যালির অনেককে নজরদারিতে রাখা হয়। এই তালিকায় রাসেল, তার স্ত্রী ও প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিন ছাড়াও অন্যান্য কর্মকর্তারা রয়েছেন। উপরের অনুমতি পেলেই তাদের গ্রেপ্তার করে আদালতে নেয়া হবে।
বহুল আলোচিত-সমালোচিত এই প্রতিষ্ঠানটি গ্রাহক ও মার্চেন্টদের কাছে দেনার পরিমাণ ৪০৩ কোটি টাকা। আর ইভ্যালির চলতি সম্পদের পরিমাণ মাত্র ৬৫ কোটি টাকা। ৩৩৮ কোটি টাকাই কোম্পানির কাছে নেই।
মন্তব্য করুন :
