আফগানিস্তানে ফিরছে ‘মোর্যাল পুলিশ’
রাকিব হাসান
কাবুল জয়ীদের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মন্ত্রিসভায় রাখা হয়েছে পাপ-পূণ্য বিষয়ক মন্ত্রণালয়। মূলত এই মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে প্রথম দফার শাসনামলে সমগ্র আফগানিস্তানে ত্রাস সৃষ্টিকারী মোর্যাল পুলিশকে আবারও ফিরিয়ে আনান হচ্ছে বলে একটি আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
তালেবানের মুখপাত্র সুহাইল শাহীন ইংরেজি ও পশতু ভাষায় তালেবানের নিয়োগপ্রাপ্ত মন্ত্রীদের তালিকা প্রকাশ করেছেন। ইংরেজি ভাষায় যে তালিকা তিনি প্রকাশ করেছেন সেখানে পাপ-পুণ্য বিষয়ক মন্ত্রীর নাম নেই। তবে পশতু ভাষায় তালিকায় পাপ-পুণ্য বিষয়ক মন্ত্রীর উল্লেখ করেছেন তিনি। মোল্লা মোহাম্মদ খালিদকে ওই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
দলটির প্রথম দফায় ১৯৯৬-২০০১ সালের শাসন আমলেও এই পাপ-পুণ্য বিষয়ক মন্ত্রী ছিল। কিন্তু ২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্র সেই সরকারকে উৎখাত করে। ক্ষমতায় বসায় হামিদ কারজাইকে। তিনি এই মন্ত্রণালয়ের নাম পরিবর্তন করে হজ ও ধর্ম মন্ত্রণালয় রাখেন।
এদিকে তালেবানের প্রথম দফার শাসনামলে সমগ্র আফগানিস্তানে ত্রাসের সৃষ্টি করেছিল এই মোর্যাল পুলিশ। সে সময় নারীদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কর্মক্ষেত্রে অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ ছিল। এছাড়া তালেবান সরকার যখন ক্ষমতায় আসে তখন কড়াকড়ি ভাবে বোরকা পরে মেয়েদের বাইরে বের হওয়ার নির্দেশনা জারি করা হয়। নারীরা কোনো আত্মীয় পুরুষ ছাড়া বাইরে যেতে পারবেন না বলেও নির্দেশনা জারি করে তালেবান। কেউ এই নির্দেশ না মানলে তালেবানের মোর্যাল পুলিশের হাতে জনসম্মুখে বেত্রাঘাতের মতো নির্মম শাস্তি পেতে হতো।
এদিকে ১৫ আগস্ট কাবুল দখল নেয়ার পর থেকেই নিজেদের অধিকারের দাবিতে নারীরা আফগানিস্তানের বিভিন্ন প্রধান শহরগুলোতে বিক্ষোভ করছে। এমনকি, তালেবানের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মন্ত্রিসভায় কোনো নারীকে পদ দেয়া হয়নি। এর প্রতিবাদে কাবুলে বিক্ষোভ করেছে নারীরা। বিক্ষোভ দমনে তালেবান ফাঁকা গুলি,লাঠিচার্জ,টিয়ার গ্যাস এমনকি চাবুকও ব্যবহার করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
পাপ-পূণ্য বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ব্যাপারে তালেবানের মুখপাত্র সুহাইল শাহীন এক বার্তা সংস্থাকে টেলিফোনে জানান,নতুন মন্ত্রণালয় খুতবা ও ধর্ম প্রচারের দিকে মনোনিবেশ করবে। তবে নারীদের ব্যাপারে এই মন্ত্রণালয় কী ধরনের পদক্ষেপ নেবে জানতে চাইলে সে সম্পর্কে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে তিনি বলেন, সেটা ভবিষ্যতই বলে দেবে।