তথ্য ফাঁস নিয়ে দুঃসংবাদ ব্যাংক খালিসহ বড় ক্ষতির শঙ্কা!
সাদাকালো নিউজ
সম্প্রতি বাংলাদেশের একটি সরকারি ওয়েবসাইট থেকে অনেক নাগরিকের ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস হয়েছে। যেখানে তাদের নাম, ফোন নম্বর, ইমেল এবং জাতীয় পরিচয়পত্রের মতো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য রয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকা ভিত্তিক আন্তর্জাতিক সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ক সংস্থা বিটক্রেক-এর গবেষক ভিক্টর মার্কোপোলোস এমন দাবি করেছেন।
সরকারি ওয়েবসাইট থেকে তথ্য ফাঁসের খবর এখন সবার মুখে মুখে। গত তিনদিনে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে এমন সংবাদ দেখে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন অনেকে। প্রত্যেকের মনে এখন একটাই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে, তথ্য ফাঁস হলে কী কী ঝুঁকিতে পড়তে পারেন তারা।
তথ্য ফাঁসের এই ঘটনাকে বড় ধরনের দুঃসংবাদ হিসেবে দেখছেন দেশের তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, ব্যক্তিগত তথ্য যদি ফাঁস হয়ে যায় তাহলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা যেকোনো সময় বিভিন্নভাবে প্রতারণার শিকার হতে পারেন। এমনকি রাষ্ট্রীয় এবং পারিবারিকভাবেও সংকটে পড়তে পারেন তারা। এর থেকেও বড় ক্ষতি হচ্ছে- প্রশাসনের প্রতি দেশের মানুষের আস্থা নষ্ট হওয়া।
এ বিষয়ে সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ তানভীর হাসান জোহা দেশের একটি গণমাধ্যমকে বলেন, নাগরিকের ফাঁস হওয়া যেকোনো ধরনের তথ্য অপব্যবহার হতে পারে। এসব তথ্য দিয়ে কোনো অপরাধী অন্য কারো নামে ভার্চুয়াল অ্যাকাউন্ট খুলে ফেলতে পারে, সিম রেজিস্ট্রেশন করে সেগুলো দিয়ে অপরাধ করতে পারে। অপরাধীকে শনাক্ত করতে গেলে ওই নিরীহ সাধারণ নাগরিক ফেঁসে যেতে পারেন। এছাড়া আরএনএ এবং ফিঙ্গারপ্রিন্টের মতো ডাটা ফাঁস হলে এটা উদ্বেগের ব্যাপার। এভাবে নাগরিকদের ডিজিটাল আইডেন্টিটিগুলো ফাঁস হলে অবৈধ লেনদেনেরও আশঙ্কা থাকে।
সাইবার ক্রাইম অ্যাওয়ারনেস ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা মুশফিকুর রহমান জানান, যে ধরনের ডাটা ফাঁস হয়েছে সেগুলো একজন মানুষের ব্যক্তিগত আইডেন্টিফাইয়েবল ইনফরমেশন। সেক্ষেত্রে এসব ডাটা নিয়ে অপরাধীরা ওই ব্যক্তিকে নানাভাবে ব্ল্যাকমেইল করতে পারে। এমনকি ব্যাংকের তথ্য জেনে অবৈধভাবে লেনদেনের মাধ্যমে নাগরিকদের আর্থিক ক্ষতিও করতে পারে অপরাধীরা।
সাইবার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রায় সময় বিভিন্ন ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড বা লোন দিতে, হাউজিং প্রতিষ্ঠান ফ্ল্যাট-জমি বিক্রির জন্য নাগরিকদের ফোন দেয়। অনেক নাগরিকই জানেন না তাদের ফোন নম্বর কীভাবে পেল ওই প্রতিষ্ঠান। মূলত আন্তর্জাতিকভাবে এসব তথ্য মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে বিক্রি হয়।
এ বিষয়ে দেশের আইটি বিশেষজ্ঞ আরিফ মঈনুদ্দিন বলেন, এসব তথ্য অনেকসময় মার্কেটিং বা ক্যাম্পেইন রিলেটেড কাজের জন্য মোটা অংকের বিনিময়ে বিক্রি করা হয়ে থাকে। বিভিন্ন কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান ব্যবসার স্বার্থে এসব তথ্য কিনে নেন।
এর আগে হঠাৎ করেই তথ্য ফাঁসের বিষয়টি বিটক্রেক-এর গবেষক ভিক্টর মার্কোপোলোস টের পান। এরপর বাংলাদেশ সরকারের কম্পিউটার ইনসিডেন্টস রেসপন্স টিমের সাথে যোগাযোগ করেন। কিন্তু বিষয়টি তখনি সামনে আসেনি। গেল ৭ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের অনলাইন সংবাদ মাধ্যম টেক ক্রাঞ্চ প্রতিবেদন প্রকাশ করলে মুহূর্তেই তা ছড়িয়ে পরে। এর পরেই নড়েচড়ে বসে কর্তৃপক্ষ।
মন্তব্য করুন :
