কে এই আব্দুস সাত্তার ভুঁইয়া ? কেন দলের সব পদ থেকে তাকে স্থায়ীভাবে বাদ দিল বিএনপি ?
সাদাকালো নিউজ
উকিল আব্দুস সাত্তার। বিএনপির প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে দলটির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত তিনি। ছিলেন দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা। পাঁচবার সংসদ সদস্যও নির্বাচিত হয়েছিলেন। একবার টেকনোক্র্যাট হিসেবে প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করেছেন।
আব্দুস সাত্তারের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়াযর সরাইলে। পিতা মুকসুদ আলী ভুঁইয়া ও মা রহিমা খাতুনের ঘরে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। ১৯৭৯ সালে প্রথম তৎকালীন কুমিল্লা-১ ও বর্তমানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
ওই সময়ে আব্দুস সাত্তার ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সহ-সভাপতি ছিলেন। দল থেকে মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিলেন তিনি। এরপর ১৯৯১ সালে এবং ১৯৯৬ সালের দুটি সংসদ নির্বাচনে বিএনপির দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
২০০১ সালের নির্বাচনে চারদলীয় জোটের শীর্ষ নেতা ইসলামী ঐক্যজোটের তৎকালীন মহাসচিব মুফতি ফজলুল হক আমিনীকে আসনটি ছেড়ে দেন আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া। ওই সময়ে বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকার গঠন করলে তাকে টেকনোক্র্যাট প্রতিমন্ত্রী করা হয়।
উকিল আব্দুস সাত্তারকে দল থেকে স্থায়ীভাবে বাদ দিয়েছে বিএনপি। দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য এবং শৃঙ্খলা পরিপন্থি কর্মকাণ্ডে লিপ্ত থাকায় তার প্রাথমিক পদসহ সব পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। বিএনপির কেন্দ্রীয় ভারপ্রাপ্ত দপ্তর সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ কাথা জানানো হয়।
গত ১১ই ডিসেম্বর জাতীয় সংসদ থেকে পদত্যাগ করেন আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া। ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। আগামী পহেলা ফেব্রুয়ারি এই শূন্য আসনে উপনির্বাচন হবে।
তবে পদত্যাগের আগে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদসহ বিএনপির সব ধরনের পদ থেকে ইস্তফা দেয়ার কথা জানিয়েছিলেন আব্দুস সাত্তার। দায়িত্ব ছাড়ার পরে বিএনপির এই বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসন থেকে উপ-নির্বাচনের জন্য মনোনয়নপত্রও সংগ্রহ করেছেন। এরপর থেকে তাকে নিয়ে চলছে নানা গুঞ্জন।
আবদুস সাত্তার ভূঁইয়ার ছেলে মাঈনুল হাসান ভূঁইয়া জানান, আমার বাবা প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে আছেন। তার বয়স হয়েছে। তাছাড়া আমার বাবা টানা ২৭ বছর জেলা বিএনপির সভাপতি ছিলেন। তিনি দলীয় চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা। দলের সিদ্ধান্তে সংসদ সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন।
ইস্তফা দেয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, গত নির্বাচনের পর থেকে কেন্দ্রীয় ও জেলা বিএনপির কোনো ব্যাপারেই আমার বাবাকে কোনো কিছু জিজ্ঞাসা করা হয়নি। তাই সম্মান থাকতে দল থেকে বাবা পদত্যাগ করেছেন।
উপনির্বাচনে অংশ নেয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, বাবার পক্ষে একজন মনোনয়ন ফরম কিনেছেন বলে শুনেছি। তবে বাবা নির্বাচন করবেন কি-না এখনও চূড়ান্ত হয়নি। আমরা পরিবারের লোকজন বসে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব।